রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০
অফিস ডেস্ক
ফরহাদ আহম্মেদ দিনাজপুর জেলার একজন কন্ঠশিল্পী, সুরকার ও মুক্তিযোদ্ধা। বাড়ি শহরের বালুবাড়ি মহল্লায়।
দিনাজপুরের বিখ্যাত মহারাজা স্কুলে শিক্ষা জীবন শুরু ফরহাদ আহম্মেদের। সঠিক সময়ে পরীক্ষা দিতে পারলে ১৯৭১ সালে মেট্রিক পাস করতেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে মেট্রিক পাস করেন এবং পরবর্তীতে দিনাজপুর সঙ্গীত কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৪ সালে কৃতিত্বের সাথে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। সঙ্গীতে দক্ষতা লাভের চেষ্টায় নবরপীর ৪ বছর মেয়াদী সঙ্গীত শিক্ষা কোর্স সম্পন্ন করেন ১৯৭৬ সালে। ১৯৭৭ সালে রেডক্রিসেন্ট আয়োজিত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় দেশাত্ববোধক, নজরুল ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে চ্যাম্পিয়নশীপ লাভ করেন। এক পর্যায়ে তিনি তার প্রতিভা গুণে নিজেকে বাংলাদেশ বেতারের সাথে যুক্ত করতে সমর্থ হন।
ফরহাদ আহম্মেদ ১৯৭৯ সালে ঢাকায় জার্মান টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়ে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টে ডিগ্রী লাভ করেন এবং জীবীকার প্রয়োজনে বৃটিশ কোম্পানী ফোসটার হুইলারের অধীনে আশুগঞ্জ সার কারখানায় চাকুরিতে যোগ দেন। এর বছরখানেক পর ১৯৮১ সালে কাতার বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের অধীনে চাকুরি নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় প্রবাস জীবন শুরু করেন এবং সেখানেও সঙ্গীত চর্চা অব্যাহত রাখেন। সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের বাঙালি শিল্পীদের সমন্বয়ে গড়ে তোলেন পদ্মা অর্কেষ্ট্রা। এটা বাঙালি কমিউনিটির মিউজিক্যাল গ্রুপ হিসেবে কাজ করে। এই অর্কেস্ট্রার মাধ্যমে কাতারের বিভিন্ন স্থানে প্রবাসী বাঙালিদের জন্য একাধিক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ফরহাদ আহম্মেদ ছাড়াও সেইসব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য অনেক শিল্পী কাতারে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
বহুবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কাতারে বাংলা সঙ্গীতের যেমন জনপ্রিয়তা ও কদর বেড়ে যায়, তেমনি ফরহাদ আহম্মেদসহ সেখানকার বাঙালি শিল্পীরাও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। বাংলাদেশের শিল্পী ফরহাদ আহম্মেদকে নিয়ে সেখানকার খলিজ টাইমস, গালফ টাইমস, প্যানিনসুলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাক ও সঙ্গীত বিষয়ক পত্রিকা সারগাম-এও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় তাকে নিয়ে। তাঁর গাওয়া ১০টি গানের অডিও প্রকাশ করে বাংলাদেশের বিখ্যাত ইমপ্রেস অডিও ভিষণ। গানগুলো কলকাতায় রেকর্ড করা হয়েছিল। এইসব গানের বেশির ভাগের সুর ছিল ফরহাদ আহম্মেদের নিজের। গানগুলোর আরো কয়েকজন গীতিকার ও সুরকার ছিলেন দিনাজপুরের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সুরকার ও গীতিকার আবুল কালাম আজাদ, মাজেদ রানা, আফরোজা রহমান প্রমুখ। ফরহাদ আহম্মেদ ১৯৮২ হতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৪ বছর কাতারে চাকুরি করার পর স্থায়ীভাবে স্বদেশে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি দিনাজপুরে অর্থাৎ নিজ জেলায় অবস্থান করছেন এবং সঙ্গীত নিয়ে বিভিন্ন কাজ করছেন।
১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন ফরহাদ আহমেদ এর বয়স হয়েছিল ১৬-১৭। এসএসসি পরীক্ষার্থী। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী উত্তাল সময়ে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে মনের মধ্যে বিপ্লবী চেতনা গড়ে তুলেছিলেন আগেই। সেই উত্তাল সময়ে ভাষা ও স্বাধীকারের দাবীতে নবরুপীর আয়োজনে শিল্পীরা বিভিন্ন স্থানে যে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন, গণসঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে মানুষকে উজ্জীবীত করে তুলতেন, সেই উদ্দীপনাময় বিপ্লবী অনুষ্ঠানমালার অংশীদার ছিলেন ফরহাদ আহমেদও। তিনি বিপ্লবী ও গণসংঙ্গীত গেয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে নিজের মধ্যে বিপ্লবী সত্তা গড়ে তুলেছিলেন।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে তাদের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন স্থানে বাঙালিরা প্রাথমিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিল। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের একজন সহায়ক ছিলেন করে ফরহাদ আহম্মেদ নিজেও। যোদ্ধাদের খাদ্য-পানি এগিয়ে দিয়ে তিনি নিজেও প্রতিরাধ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। বাঙালির তীব্র প্রতিরোধে পাকিস্তানি সেনাদের প্রধান ক্যাম্প কুঠিবাড়ি হাতছাড়া হলে ২৮ মার্চ দিনাজপুর শহর থেকে হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর, পার্বতীপুর ও ফুলবাড়ির দিকে পালিয়ে যায়। কিন্তু ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা আবার দিনাজপুর দখল করে নেয়। দিনাজপুরে থাকা তখন বিপজ্জনক হয়ে উঠে। হাজার হাজার মানুষ শহর ছেড়ে প্রথমে গ্রামে, পরে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এমতাবস্থায় ফরহাদ আহম্মেদ ভারতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রথমে ডালিমগাঁও ইয়োথ ক্যাম্পে রিক্রুট হন। পরে কর্ণজোড়া ইয়োথ (দঃ দিনাজপুর) ক্যাম্পে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ এবং শিলিগুড়ির পানিঘাটায় একমাসের উচ্চতর সামরিক ট্রেনিং গ্রহণ করেন। তার সাথে যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিরেন তাদের মধ্যে উল্লেকযোগ্য দুজন বিশেষ ব্যক্তিত্ব হলেন ফুলবাড়ির মোস্তাফিজার রহমান (পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী) এবং চিরিরবন্দরের গোলাম মোস্তফা (পরে পুলিশ সুপার)। ফরহাদ আহম্মেদ উচ্চতর সামরিক ট্রেনিং গ্রহণ শেষে ৭নং সেক্টরের তরঙ্গপুর ক্যাম্প হতে ৭৪ নম্বর গেরিলা টিমের টিম লিডার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামেন। দিনাজপুর সদরের খানপুর, বিরলের রাধিকাপুর, হিলিসহ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় গেরিলা টিম নিয়ে কখনো গেরিলা কায়দায় কখনো সম্মুখ লড়াইয়ে হানাদার ও রাজাকার বাহিনীকে নাস্তানুবাদ করতে থাকেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে তার অবস্থান ছিল বোচাগঞ্জের চান্দোহর (চান্দেরহাট) সীমান্তে। তিনি জানান, কমান্ডার হিসেবে তিনি মুক্ত দিনাজপুর শহরে প্রবেশ করেন ১৪ ডিসেম্বর ভোর ৫টায়। তার ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন দিনাজপুর নিউটাউনের আব্দুল ওয়াহেদ। তার ১৮ সদস্যে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন আব্দুল হক (রাজশাহী), মো. ইফতেখার আলম (কালিতলা), আইজ্যাক নিদার হিম (মহারাজা স্কুল মোড়), আব্দুল লতিফ, রফিকুল ইসলাম, মো. শাহজাহান (বরিশাল), আব্দুস সালাম, আব্দুল জলিল (হঠাৎপাড়া) দক্ষিণ বালুবাড়ির আব্দুল বাতেন, সিদ্দিকুর রহমান, আখতার হোসেন, রাধেশ্যাম শাহ ও মো. মুসলিম প্রমুখ তার সাথে ছিলেন।
ফরহাদ আহম্মেদ বলেন, ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর বোচাগঞ্জের চান্দোহর (চান্দেরহাট) সীমান্ত হতে আমি আমার টিম নিয়ে যুদ্ধ করতে করতে পীরগঞ্জ- সেতাবগঞ্জ এলাকার ঘাটপার এলাকা দিয়ে টাঙ্গন নদী পার হয়ে মাহেরপুর দিয়ে দিনাজপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকি। ঘাটপার হওয়ার সময় আমাদের একজন যোদ্ধা মারা যায় যার পাকা কবর টাঙ্গন ব্রিজের কাছে রয়েছে। এবং ১৩ ডিসেম্বর বিকাল প্রায় ৪টায় ধুকুরঝারি হাট সংলগ্ন ঢেঁড়াপাটিয়া পর্যন্ত এসে তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হই। সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের সাথে প্রায় তিন ঘন্টাব্যাপী গুলি বিনিময় হয়। সেখানে একটি বড় বাংকারের ভেতরে অবস্থান নিয়ে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা ও শত্রুদের মোকাবেলার চেষ্টা করছিলাম। আমাদের মাথার উপর দিয়ে অসংখ্য গোলা ও গুলি উড়ে যাচ্ছিল। দূর্ভাগ্য যে আমাদের পেছনে ইন্ডিয়ান সেনাদের যে সাপোর্ট টিম থাকার কথা ছিল তারা আমাদের থেকে অনেক দূরে ছিলেন। ফলে সেই সময় আমরা তাৎক্ষণিক মূহুর্তে তাদের কোন সাপোর্ট পাইনি। আমাদের দু’জন মুক্তিযোদ্ধা ঐ যুদ্ধে মারা যান। শহিদদের একজন হলেন আবু সুফিয়ান, আরেকজন আব্দুল গনি। সুফিয়ান ছিলেন নোয়াখালির এবং গনি কুমিল্লার। দু’জনই ইপিআর সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের লাশ স্থানীয়দের সহায়তায় রাস্তার পাশে তাদের কবর দেয়া হয়। সন্ধ্যার পর হানাদারদের গুলির পরিমান কমে এলে আমরা মঙ্গলপুরের দিকে ক্রলিং করতে করতে পিছিয়ে যাই। মাইলখানেক ক্রলিং করার পর হাটতে থাকি। মঙ্গলপুরে গিয়ে ভারতীয় সেনাদের দেখা পাই। এরপর সেখান থেকে আবার সম্মিলিতভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে দিনাজপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকি এবং রাত ৩টা সাড়ে তিনটার দিকে কাঞ্চন ঘাটে এসে সেল্টার নেই। ১৩ ডিসেম্বর রাতে মঙ্গলপুর হতে দিনাজপুরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় কোথাও কোন বাধা পাইনি। এমনকি কয়েক ঘন্টা আগে ঢেঁড়াপাটিয়া-ধুকুরঝারি এলাকায় যে বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম এবং ভয়াবহ গুলি বিনিময় করেছিলাম মাত্র দুই-তিন ঘন্টার ব্যবধানে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। সেই এলাকা পার হয়ে কাঞ্চন ঘাট পর্যন্ত পৌঁছে গেলেও আমরা কোথাও পাকিস্তানি সেনাদের কোন প্রতিরোধের মুখে পড়ি নাই। কাঞ্চন ঘাটে উপস্থিত হয়ে আমরা মাঝে মাঝেই জয় বাংলা শ্লোগান পাচ্ছিলাম যা শহরের ভেতরের দিক থেকে আসছিল। আমরা ভোর ৫টায় দিনাজপুর শহরে ঢুকে পড়ি। শহরে ঢুকে দেখি শহরের রুস্তম স্টুডিও ও পাওয়ার হাউজে আগুন জ¦লছে। জোড়া ব্রিজের কাছে ভারতীয় আর্মির এক সৈনিকের লাশ পড়ে আছে। শহর একদম ফাঁকাই বলা যায়। তবে গুটি কয়েক লোক জয় বাংলা শ্লোগানে উল্লাস প্রকাশের মাধ্যমে আমাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন। আইন কলোজ মোড়ে শামু নামের একজন আমাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরেন। তার কাছে এবং আরো অনেকের কাছে জানতে পারি যে, ১৪ ডিসেম্বর ভোর ৫টায় আমরা শহরে ঢোকার ঘন্টাখানেক আগেই পাকিস্তানি সেনারা শহর ছেড়ে চলে গেছে।
ফরহাদ আহম্মেদ একজন শিল্পী হিসেবে দেশে ও বিদেশে বাংলা সংগীত চর্চার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুখ যেমন উজ্জল করেছেন, তেমনি মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপুর্ণ ভূমিকা ও অবদানের কারণে জাতি তাঁকে চির কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করবে। তিনি বর্তমানে দিনাজপুরের সংগীত শিল্পীদের দূরাবস্থা দূর করার লক্ষ্যে সংগীত শিল্পী কল্যাণ পরিষদ গঠণ করেছেন। তার সাথে কাজ করছেন প্রশান্ত কুমার রায়, হাসান আলী শাহ, অশোক কুমার রায়, হাবিবুল বাশার তুষার, বকুল, সম্ভুনাথ ঘোষ, মাসুদা, পম্পি সরকার। জীবনের বাকি সময়টা সঙ্গীত চর্চা ও শিল্পীদের কল্যাণে কাটাবেন বলে জানালেন ৬৬ বছর বয়সী ফরহাদ আহম্মেদ। ফরহাদ আহমেদের স্ত্রী তাজেদা আহমেদ হলেন দিনাজপুরের বিশিষ্ট সাংবাদিক কামরুল হুদা হেলালের বড় বোন। তাদের দুই সন্তানের নাম মিদফাহ আহমেদ ও ইয়ারিব আহমেদ।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী ফরহাদ আহম্মেদ ১৯৭২ সালের ৬ জানুয়ারি মহারাজা স্কুলে সংঘটিত মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন। তার বর্ণনায় জানা যায় যে, ঐদিন বিস্ফোরণের ১৫-২০ মিনিট আগে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সহ হাটতে হাটতে যখন পশু হাসপাতালের কাছে চলে এসেছিলেন সেই সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে এবং তিনি বেঁচে যান।
লেখকঃ আজহারুল আজাদ জুয়েল
প্রকাশ: ৪৫০ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫০ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫০ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫০ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫০ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫২ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৪ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৪ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৪ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৪ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৪ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৪ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৪ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৫৬ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬১ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬১ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬১ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬১ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬১ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬১ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬১ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬৩ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬৩ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬৩ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬৩ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬৩ দিন আগে
প্রকাশ: ৪৬৩ দিন আগে