মঙ্গলবার, ০৩ নভেম্বর, ২০২০
অফিস ডেস্ক
নিউজ ডেস্কঃ ষড়যন্ত্র, ক্ষমতা দখল-পাল্টাদখলের ধারাবাহিকতায় রাতের আঁধারে কারাগারে বন্দী অবস্থায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ৪৫ বছর আগের নৃশংস এ ঘটনায় করা মামলাটি জেলহত্যা মামলা নামে পরিচিত।
মামলার ১১ আসামির মধ্যে ৩ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও ৮ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। আসামিদের মধ্যে এখনো ১০ জন পলাতক।
জেলহত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধা। এই তিন আসামি এখন কোথায় আছেন, সে ব্যাপারে সরকারের কাছে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। তথ্য আছে কেবল যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুজনের ব্যাপারে। এর মধ্যে কর্নেল (অব.) এম বি নূর চৌধুরী কানাডায় এবং লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী আছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
নূর চৌধুরী বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। তাঁকে দেশে ফেরাতে কানাডায় আইনি লড়াই চালাচ্ছে বাংলাদেশ। গত বছরের অক্টোবরে কানাডার আদালত বাংলাদেশের করা এ-সংক্রান্ত একটি আবেদনে সাড়া দিয়েছেন। অন্যদিকে রাশেদ চৌধুরীও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরাতে কয়েক বছর ধরেই মার্কিন প্রশাসনের নানা স্তরে অনুরোধ জানিয়ে আসছে সরকার। গত অক্টোবর মাসে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগানের ঢাকা সফরের সময় রাশেদকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, পলাতক আসামি যাঁরা বিদেশে আছেন, তাঁদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। চলতি বছরেই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাজেদকে (জেলহত্যা মামলারও আসামি) গ্রেপ্তারের পর তাঁর ফাঁসি ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় চার নেতাকে। তাঁরা হলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে। নির্মম এ ঘটনার আড়াই মাস আগে দেশের ইতিহাসে নৃশংসতম ঘটনা ঘটে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা করা হয়।
জেলখানায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পরদিন ৪ নভেম্বর তৎকালীন কারা উপমহাপরিদর্শক কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সেনাবাহিনীর রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, তাঁর নেতৃত্বে চার-পাঁচজন সেনাসদস্য কারাগারে ঢুকে চার নেতাকে হত্যা করেন। গুলি করার পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ঘটনার পরদিন মামলা হলেও এই মামলার তদন্ত থেমে ছিল ২১ বছর। ১৯৯৬ সালের জুন মাসে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।
জেলহত্যার ২৯ বছর পর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিন আসামি রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১২ আসামি হলেন লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর (অব.) বজলুল হুদা, মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ, লে. কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম, কর্নেল (অব.) এম বি নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) আহম্মদ শরিফুল হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ, ক্যাপ্টেন (অব.) কিশমত হাশেম এবং ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমুল হোসেন আনসার।
কারাগারে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা এবং এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার) বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। মারফত আলী শাহ ও দফাদার আবুল হাশেম মৃধা মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান। এ ছাড়া আপিল করা চার আসামি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পান। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপর আট আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। আপিল বিভাগ দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে খালাস করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
তবে জেলহত্যা মামলায় তাঁরা অব্যাহতি পেলেও ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা এবং এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদের (ল্যান্সার) ফাঁসি কার্যকর হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আরেক আসামি মহিউদ্দিন আহমেদেরও (আর্টিলারি) ফাঁসি সেদিন কার্যকর হয়। যদিও মহিউদ্দিন জেলহত্যা মামলায় আসামি ছিলেন না। সর্বশেষ চলতি বছরের ১১ এপ্রিল দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয়। মাজেদ জেলহত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত।
জাতীয় চার নেতার একজন এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছেলে এখন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে অপেক্ষা করছি। অপেক্ষার পালা আজও শেষ হয়নি। চার নেতার পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো আমারও দাবি, আসামিদের দেশের বাইরে থেকে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করা হোক।’
প্রকাশ: ০১ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
প্রকাশ: ০১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট আগে
প্রকাশ: ০৪ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
প্রকাশ: ০৪ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে
প্রকাশ: ০৫ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
প্রকাশ: ০৫ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
প্রকাশ: ০৫ ঘন্টা ২৬ মিনিট আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে
প্রকাশ: ১ দিন আগে